• ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোরআন হিফজ করলেন ফিলিস্তিনি কন্যা রিম হাসপাতালের বেডে শুয়েই

Gagan Alonews
প্রকাশিত অক্টোবর ৫, ২০২৫, ১৭:২৭ অপরাহ্ণ
কোরআন হিফজ করলেন ফিলিস্তিনি কন্যা রিম হাসপাতালের বেডে শুয়েই
সংবাদটি শেয়ার করুন....

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান ভয়াবহতা ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে এক বিরল সাহস ও ঈমানি দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ফিলিস্তিনি কন্যা রিম আবু উদ্দাহ। খান ইউনিসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি পবিত্র কুরআনের সম্পূর্ণ হিফজ সম্পন্ন করেছেন।

নিজের এই অর্জনকে তিনি হামলায় নিহত মায়ের আত্মার প্রতি উৎসর্গ করেছেন।শনিবার (৪ অক্টোবর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা সত্ত্বেও রিমের এই অবিচল অধ্যবসায় তাকে কোরআনের পথে জয়ী করেছে।হাসপাতালের বেড থেকে রিম আল জাজিরাকে জানান, পবিত্র কোরআন মুখস্থ করার পথটি একই সাথে সুন্দর ও কঠিন ছিল। তিনি বলেন, আমি আমার শহীদ মায়ের আত্মার মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে কোরআন হেফজ সম্পন্ন করেছি, যদিও গুরুতর আঘাতের কারণে আমি খুব ক্লান্ত ছিলাম।

রিম জানান, গত বছরের ২৪ আগস্ট ছিল তার মায়ের মৃত্যুদিবস। তিনি সেই দিনেই হিফজ সম্পন্ন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার দুই দিন আগেই, অর্থাৎ ২২ আগস্টের বিমান হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। এই ভয়াবহ আঘাত তার শরীরের একাধিক স্থানে শেলবিদ্ধ করে এবং পেট জখম হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি সেই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলাম, যাকে দখলদাররা নিরাপদ বলে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু আমাদের পাশের তাঁবুতেই হামলা চালানো হয়। আল্লাহর অনুগ্রহে, প্রায় এক মাস চিকিৎসার সময় হাসপাতালেই আমি কুরআন মুখস্থ সম্পন্ন করি। আলহামদুলিল্লাহ, আমি কুরআন মুখস্থ করেছি।

রিমের বোন সাফা আবু উদ্দাহ জানান, রিম হাসপাতালে শয্যায় শুয়ে থেকেই কুরআন হিফজ শেষ করে। তিনি কোরআন তেলাওয়াত করতেন, আর চিকিৎসকেরা তার অবিশ্বাস্য ধৈর্য ও মানসিক শক্তি দেখে রীতিমতো বিস্মিত হতেন। রিম তার বোন সাফাকে নিজের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ও জীবনের অবলম্বন বলে উল্লেখ করেছেন।

রিমের ভাষায়, এই ভয়াবহ যুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে কোরআনই ছিল আমার ধৈর্য ও স্থিতিশীলতার প্রধান উৎস। কোরআন হিফজে এই অসাধারণ ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের স্বীকৃতিস্বরূপ গাজা শহরের হাবিব মুহাম্মদ সেন্টার-এর পক্ষ থেকে রিম আবু উদ্দাহকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়েছে। রিমের এই অর্জন গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও ঈমান, দৃঢ়তা আর শিক্ষার প্রতি ভালোবাসার এক জ্বলন্ত প্রতীক হিসেবে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।