• ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সড়কে সেনা টহল নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তোড়জোড়

Gagan Alonews
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১২:১৫ অপরাহ্ণ
সড়কে সেনা টহল নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তোড়জোড়
সংবাদটি শেয়ার করুন....

নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও লাগাতার বিক্ষোভের মুখে কে পি শর্মা অলি সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে টহল দিচ্ছে সামরিক বাহিনীর সাঁজোয়া যান। সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকতে এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সামরিক চেকপয়েন্ট বসিয়ে যানবাহনের কাগজপত্র ও পরিচয় যাচাই করছে সেনারা।

জেন-জি বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাদের অহিংস আন্দোলনকে কিছু সুযোগসন্ধানী অনুপ্রবেশকারী সহিংসতায় রূপ দিয়েছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রাজারাম বাসনেটও একই কথা বলেছেন। তিনি জানান, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে, দেশের এই নেতৃত্বশূন্য পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নেপালে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেল বিক্ষোভকারী জেন-জি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ছাত্রনেতারা তাদের দাবির একটি নতুন তালিকা তৈরি করছেন বলে জানা গেছে।

কারা হতে পারেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান?

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে আপাতত দুটি নাম সামনে এসেছে কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহ এবং নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। জেন-জি আন্দোলনকারীরা সুশীলা কার্কিকে তাদের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর আলোচনায় নেতৃত্ব দিতে পারেন।

ক্ষতি ও মানুষের প্রতিক্রিয়া

নেপালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত দুদিনের সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০ জন নিহত এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। গত সোমবার বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারি বাহিনীর গুলিবর্ষণের পর পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়, যার ফলস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি, প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্য মন্ত্রীদের পদত্যাগ করতে হয়।

এই সহিংসতার পরও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিবর্তনের এক দৃঢ় আশা দেখা যাচ্ছে। ১৪ বছর বয়সী সাং লামার মতো অনেকে মনে করেন, এই আন্দোলন নেপালের দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থার অবসান ঘটাবে। অন্যদিকে, ২৪ বছর বয়সী পরশ প্রতাপ হামাল, যিনি নিজেই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, এখন সড়ক পরিষ্কার করে বলছেন, নেপালের ‘স্বাধীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন’।

তবে সবার আশা যে এক তা নয়। ৩৬ বছর বয়সী রাকেশ নিরাউলার মতো অনেকেই এই ব্যাপক সহিংসতার সমালোচনা করেছেন, যদিও তারা পরিবর্তনের পক্ষে। উদ্যোক্তা প্রভাত পাউডেল বলেন, সরকারি ভবন পুড়িয়ে দেওয়া তাকে হতবাক করেছে, কারণ এগুলো জাতীয় সম্পদ।