নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
২২ জুলাই ২০২৫: নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর শিল্পাঞ্চলে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ – সবাই এদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে অস্ত্রের মুখে চাঁদা আদায়, মারধর এবং হুমকির ঘটনা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাঁদাবাজির ধরন ও শিকার কাঁচপুর এলাকায় চাঁদাবাজদের প্রধান শিকার হচ্ছেন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক, পণ্যবাহী গাড়ির চালক ও হেলপার, এবং স্থানীয় ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী। নির্মাণাধীন ভবন, বালু পরিবহন, এমনকি কাঁচামাল পরিবহনের সময়ও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা কিছু যুবক এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
পরিবহন খাতে: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর অংশে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা হয়। চালকদের অভিযোগ, চাঁদা না দিলে গাড়ি আটকে দেওয়া হয়, এমনকি মারধরও করা হয়। * ব্যবসায়ীদের উপর: কাঁচপুরের বিভিন্ন বাজারে দোকানদারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। নতুন কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করতে গেলেই দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের ‘সেলামি’। * জমি দখল ও নির্মাণ কাজে: ভূমি দখল এবং নির্মাণাধীন প্রকল্পে চাঁদাবাজির ঘটনাও কম নয়। অনেক সময় ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে জমির মালিকানা দাবি করে চাঁদা দাবি করা হয়।
প্রতিবাদে শঙ্কিত মানুষ ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতিবাদ করলে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ জানালে তাদের উপর নেমে আসে আরও ভয়াবহ নির্যাতন। ফলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা দিনের পর দিন ক্ষতির শিকার হচ্ছি। কিন্তু কিছু বলার সাহস নেই। বললে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়, এমনকি পরিবারের সদস্যদেরও হুমকি দেয়।” প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের অভিযোগ, চাঁদাবাজির ঘটনা নিয়মিত ঘটলেও পুলিশ প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ
নিচ্ছে না।
মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালালেও মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। এতে চাঁদাবাজরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জনবিক্ষোভের আশঙ্কা কাঁচপুরের সাধারণ জনগণ এবং ব্যবসায়ীরা এখন ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছেন। যদি দ্রুত এই চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে বড় ধরনের জনবিক্ষোভের আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবিলম্বে চাঁদাবাজদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। প্রশাসনের প্রতি আবেদন: কাঁচপুরের জনগণ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে, দ্রুত এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।