• ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযুদ্ধের অজানা দলিল, তাজউদ্দীন আহমদের স্বহস্তে লেখা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সারসংক্ষেপ

gazette
প্রকাশিত মার্চ ২৬, ২০২৫, ১৯:৫৮ অপরাহ্ণ
মুক্তিযুদ্ধের অজানা দলিল, তাজউদ্দীন আহমদের স্বহস্তে লেখা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সারসংক্ষেপ
সংবাদটি শেয়ার করুন....

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। সেটা ছিল অস্থির ও উত্তাল এক সময়। পরাশক্তিগুলোর মধ্যে তীব্র ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের পরস্পরবিরোধী অবস্থান। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও নানা টানাপোড়েন। নিজ দলের মধ্যেও মতবিরোধের শেষ নেই। এসবের মধ্যেই সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। নানা মতের মোকাবিলা ও সমন্বয় করে জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে স্থির লক্ষ্যে সবকিছু সামলে গেছেন। সরকারের সব কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে গেছেন বিজয়ের লক্ষ্যে।

এই গুরুদায়িত্ব পালনের মধ্যেও তাঁর দলের মধ্যে ভূমিকা রাখতে হয়েছে। সে সময় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির একাধিক বৈঠক চলেছে। তাতে তাজউদ্দীন আহমদ অংশ নিয়েছেন। শুধু অংশ নেননি। বৈঠকে কে কী বলছেন, সেসব মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। নিজের হাতে তা যত্ন করে টুকে রেখেছেন। তাঁর সেই নোট টেলিগ্রাফের মতো অতি সংক্ষেপে প্রায় সাংকেতিক ভাষায় লেখা। সেই অগ্নিগর্ভ সময়ের নানা মাত্রা তাঁর সাংকেতিক নোটে অক্ষয় হয়ে আছে। বিন্দুতে সিন্ধুর মতো তিনি প্রত্যেকের মোক্ষম কথাগুলো অল্প আঁচড়ে ধরে রেখেছিলেন। তাঁদের কথার ফাঁকে ফাঁকে দু–একটি জায়গায় দু–চার শব্দে কখনো কখনো নিজের চকিত মন্তব্যও তিনি লিখে রাখছিলেন। পাঠকদের বোঝার সুবিধার জন্য তাঁর নিজের মন্তব্যগুলো এখানে বাঁকা হরফে রাখা হয়েছে। পুরোনো পাণ্ডুলিপিতে দু–চারটি শব্দ পড়া যাচ্ছে না। আমরা সেসব জায়গায় ‘… (অস্পষ্ট)’ লিখে দিয়েছি।

বহু আগে থেকেই তাজউদ্দীন আহমদের দিনপঞ্জি লেখার অভ্যাস ছিল। তাঁর দিনপঞ্জি আমাদের ভাষা আন্দোলনকে নতুন আলোয় দেখতে ও বুঝতে সাহায্য করেছে এবং এর ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাঁর মুক্তিযুদ্ধকালের অভিজ্ঞতা হতে পারত বাংলাদেশের ইতিহাসের সেই নিয়তিনির্ধারক সময়কে ভেতর থেকে জানার অমূল্য এক উপাদান। তাজউদ্দীন আহমদের নিষ্করুণ হত্যাকাণ্ড এবং সেই অস্থির সময়পরিসরের ঘটনাধারা সে সৌভাগ্য থেকে আমাদের বঞ্চিত করেছে। সেই শূন্যতা কখনো পূরণ হবে না। কিন্তু তাঁর স্বহস্তে লেখা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের নোট সেই গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে একচিলতে আলোর মতো। এখান থেকে আমরা এমন কিছু তথ্য পাব, যা বহু ঘটনার ওপরে নতুন আলো ফেলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

বস্তুত আমাদের হাতে তাজউদ্দীন আহমদের স্বহস্তে লেখা নোট আছে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত। ভবিষ্যতে আমাদের তা বই আকারে প্রকাশ করার পরিকল্পনা আছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা–পরবর্তী প্রথম তিনটি বছরকে তা নতুন করে আমাদের সামনে হাজির করবে বলে আমরা আশা করি।

তাজউদ্দীন আহমদ দিনপঞ্জি লিখতেন ইংরেজি ভাষায়। এসব নোটও সেভাবেই লিখেছেন। তবে দেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পর তিনি লেখালেখির জন্য ফিরে এসেছিলেন বাংলা ভাষায়। বাকি নোটগুলো বাংলাতেই লেখা।

তাজউদ্দীন আহমদের এসব নোট প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফও দীর্ঘদিন ধরে তাঁর সংগ্রহে রেখে দিয়েছিলেন। তাঁর এবং প্রথম আলোর উদ্যোগে এত দিন পর তা পাঠকের সামনে আসছে। নোটের অনুবাদক শেখ সাবিহা আলমকে ধন্যবাদ জানাই হস্তাক্ষর থেকে পাঠোদ্ধার করে তা অনুবাদ করার জন্য। নোটগুলোর টীকা তৈরি করে দিয়েছেন রাশেদুর রহমান। তাঁকেও ধন্যবাদ।

কার্যনির্বাহী কমিটির সভা

অনুবাদ: শেখ সাবিহা আলম

২০.১০.৭১.

সকাল ১১টা

১. পরামর্শক কমিটি—কীভাবে এবং কোন প্রেক্ষাপটে গঠিত হয়েছিল।

২. জনাব আজিজুর রহমান আক্কাসসহ আরও কয়েকজন প্রতিনিধিদের ওপর নজরদারি করার জন্য জনাব মজুমদারকে জনাব এ খালেক নিয়োগ দিয়েছেন।

৩.

২১.১০.৭১

সকাল ১০টা ৩০ মিনিট

ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি

১. বাংলাদেশের ভেতরে থাকা সাড়ে ৬ কোটি মানুষের জন্য কর্মসূচি।

২. ৯০ লাখ শরণার্থীর কাজের ব্যাপারে কর্মসূচি।

৩. মুক্তিযোদ্ধাদের রাজনৈতিক উদ্দীপনার এবং স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কাঠামোতে তাঁদের ফলপ্রসূ আত্তীকরণের জন্য কর্মসূচি।

জনাব রাজ্জাক

১. মুজিব বাহিনী।

২. কমিউনিস্টদের কার্যকলাপ, মুক্তিবাহিনীর লুটপাট, ন্যাপের ক্যাম্প, আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবী লীগের কর্মী খুন, সেক্টর কমান্ডারদের আচরণ।

৩. ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন: পাক সেনাবাহিনী > গেরিলা > ভারত

৪. বিভিএসসি

৫. আল মুজাহিদী

জনাব ওবায়েদ আর.

১. প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ভাষাগত সমস্যা হচ্ছে।

২. পুনর্নিয়োগ: যথাযথ যাচাই-বাছাই হচ্ছে না।

জনাব মমিন তালুকদার

১. মুজিব বাহিনী—আওয়ামী লীগের কর্মীসহ পাঁচজনকে হত্যা করেছে—উল্লাপাড়া।

২. দুজন কেরানি—বি. ক্যাম্প—ভাসানী গ্রুপের

৩. যথাযথ সূত্রের বরাত ছাড়া বিবৃতি না ছাপতে সংবাদপত্রগুলোকে অনুরোধ জানাতে হবে।

৪. প্রচারণাসামগ্রী ছাপাতে হবে এবং ভেতরে পাঠাতে হবে।

৫. উপনির্বাচন প্রতিহত করতে হবে।

জনাব নুরুল ইসলাম মঞ্জুর

১. লিবারেশন কাউন্সিল।

২. সশস্ত্র বিভাগের দায়িত্ব যোগ্য মানুষ অথবা ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের হাতে দিতে হবে।

৩. সাধারণ সম্পাদকের অন্তত যেকোনো একটা পদে ইস্তফা দেওয়া উচিত।

জনাব শামসুল হক

১. মাসে একবার কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডাকা।

২. তলবি সভা কেন?

৩. অনেক প্রশ্ন—হিসাবের গোলমালের জন্য কে দায়ী?

৪. শেখের গ্রেপ্তারের জন্য সাধারণ সম্পাদক দায়ী।

৫. সাধারণ সম্পাদক বললেন: নিয়োগের জন্য চারজন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পার্থক্য করা হলো কেন?

৬. এস আলম খান বলেন: বাংলাদেশ সরকার, এমএনএ আর এমপিএদের মধ্যে ফারাক করতে পারছে না কেন?

৭. এস আলম খান: সাদেক খান প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব।

৮. শেখ ফজলুল হক মণি—এ পর্যন্ত ভারতের স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি। টিএ এখনো পিএম। তিনি কোনো অদৃশ্য সরকারের হাতে পরিচালিত হচ্ছেন।

৯. বিদেশি প্রতিনিধিদল—কর্মীবৃন্দ।

১০. যানবাহন।

১১. ক) তরুণ—শুধু আগরতলাতেই ১১০০ জন জেলবন্দি।

—ওদের শনাক্ত ও মুক্ত করার কর্মসূচি।

—এই উদ্দেশ্যে একটা কমিটি গঠন করা দরকার।

খ) শিবির রক্ষণাবেক্ষণ—শরণার্থীদের চেয়ে ৪০ পয়সা বাড়তি বরাদ্দ সত্ত্বেও খাদ্যের জন্য ছেলেরা কষ্ট করছে।

১২. বিভিএসসি—আওয়ামী লীগকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

১৩. কার্যনির্বাহী কমিটির মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের অনুমোদন করাতে হবে।

১৪. ডাকমাশুল—হিসাব–নিকাশ—?

তরুণদের ক্যাম্পের জন্য ১৪,৫০,০০০ টাকা?

জনাব রশীদ১০

১. বাংলাদেশের কোষাগার ও বিদেশ থেকে আসা টাকার হিসাব–নিকাশ

অনুসন্ধান কমিটি—

১) প্রধানমন্ত্রী

২) এম শামসুল হক

৩) অধ্যাপক ইউসুফ আলী

৪) জনাব এ রশীদ

৫) জনাব মতিউর রহমান

২. রমজানের আগে ছেলেদের থাকা এবং রেশনের বিষয় চূড়ান্ত করা।

৩. সাত দিনের মধ্যে শীতের কাপড়।

৪. প্রতি মাসের প্রথম রোববারে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক।

জনাব আজিজুর রহমান আক্কাস

১. আওয়ামী লীগ–নেতাদের পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি অবশ্যই বন্ধ করা জরুরি।

২. ইবিআর, ইপিআর প্রভৃতি প্রতি মাসে ৭৫ টাকা—তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারীরা পুরো বেতন পাবেন। গুরুত্বপূর্ণ

৩. মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বাদে অন্য কর্মকর্তারা সক্রিয় হননি কেন?

৪. যেসব ক্যাম্প শুধু চালই পেয়েছে খাবার রান্নার আরও সরঞ্জামের কিনতে তাদের আরও টাকা লাগবে।

৫. কল্যাণী থেকে বাজারে ওষুধ আর হরলিকস বিক্রি হচ্ছে।

৬. করিমপুর—কর কর্মকর্তারা?

৭. ক) আসহাবুল হক—কুষ্টিয়া জেলার টাকা ও সোনা

খ) আক্কাসকে গ্রেপ্তার করে পাঠাতে হবে = মেজর ওসমান। ড. আসহাবুল হক।

= তদন্ত ও ব্যবস্থা অত্যাবশ্যক।

৮. এমএফ১২ ও এফএফের১৩ মধ্যে রেশনের ফারাক।

৯. এফএফদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য  আওয়ামী লীগ নেতাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ।

১০. আওয়ামী লীগকে সাড়ে তিন মাসেও কেন সক্রিয় করা গেল না?

মিসেস বি এন আহমদ১৪

১. এগারোটি অঞ্চলের প্রতিটিতে এক হাজার নারীর বসবাসের পৃথক ব্যবস্থা।

জনাব নুরুল হক১৫

১.  আওয়ামী লীগের জেলাওয়ারি কর্মীদের অর্থসহায়তা দেওয়া হবে। দেশের ভেতরে  আওয়ামী লীগের যে কর্মীরা কাজ করেছেন তারা তালিকা তৈরি করবে।

২. সর্বস্তরে ‍মুক্তিযুদ্ধের দিকনির্দেশনা দেবে রাজনৈতিক কমিটি।

৩. শীতে যুদ্ধের মাত্রা বাড়াতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?

৪. আমলাতন্ত্রের কর্তৃত্বপরায়ণতা।

৫. যেকোনো ধরনের বৈদেশিক সাহায্য সরকারের জ্ঞাতসারে সঞ্চালন করতে হবে।

৬. পূর্বাঞ্চলের সেক্টরগুলোতে আর কোনো অভ্যর্থনাকেন্দ্র বা বা ইয়ুথ ক্যাম্প খোলা হবে না।

৭. সরকারের তহবিলের হিসাব–নিকাশ উপস্থাপন করতে হবে।

৮. সরকারি তহবিল বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

৯. বিএলএফ১৬–বিডিএফের সমস্যার দ্রুত সমাধান এবং তাদের ঐক্যবদ্ধ কাজ শুরু করা দরকার।

জনাব এ সামাদ১৭

১. কার্যনির্বাহী কমিটির বিবেচনার জন্য আওয়ামী লীগকে সক্রিয় করার একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করা প্রয়োজন।

জনাব মোশাররফ হোসেন১৮

১. প্রতিটা সেক্টরে একটি করে ব্লাডব্যাংক। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এটা সম্ভব নয়।

২. চাঁপাবেড়িয়া শরণার্থী শিবির—কর্মীদের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটির কারণে রেশন স্থগিত।

৩. ডাক্তার আফতাবউদ্দিন আহমেদ এমপিএ—এমপিএ ও চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে দ্বিগুণ বেতন।

৪. যশোরের মুক্তাঞ্চল—ত্রাণ ও ওষুধ দরকার।

৫. কিউ জামান এমএনএর শিক্ষক সংগঠন।

৬. সৈয়দ আহমেদ; বিএলএফ—ক্যাপ্টেন হুদার হাতে গ্রেপ্তার।

৭. রেডিও—পিএম, জগজীবন রাম, ২৫০০ … (অস্পষ্ট)

জনাব এ এম উকিল১৯

১. অনৈক্যের বীজ—আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বাইরে মুজিব বাহিনীর চারজন নেতাকে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে।

২. পরামর্শক কমিটি—কেন?

জনাব ও আর২০

১. সেক্টর কমান্ডাররা এলওকে২১ গুরুত্ব দিচ্ছে না।

২. এলওর মাধ্যমেই গেরিলা নেতৃত্ব নির্ধারিত হওয়া উচিত।

৩. প্রশিক্ষণ দেওয়া ৬১ কর্মকর্তার যাচাই-বাছাই আবশ্যক।

—সদ্য নিয়োগ পাওয়া ক্যাডেটদের যাচাই-বাছাই আবশ্যক।

৪. ২ নং সেক্টর কমান্ডারকে বদলি করতে হবে।

৫. অবাধ্য কমান্ডারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।

৬. মেজর শওকতের পদত্যাগ—কেন?

জনাব শেখ এ আজিজ

১. কার্যনির্বাহী কমিটির সংযুক্তি সভার প্রতিবেদন তৈরির জন্য একটি কমিটি।

জনাব এ আর সেরনিয়াবাত২৩

১. কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে কমিটি গঠন

জনাব ময়েজ উদ্দিন২৪

জনাব আর উদ্দিন ভূঁইয়া২৫

১. শহীদদের পরিবারেরা ত্রাণ পায়নি—কেন?

২. সিএএর মাধ্যমে ত্রাণের ব্যবস্থাপনা করা উচিত।

৩. একটি কমিটি: ১) চেয়ারম্যান, আঞ্চলিক কাউন্সিল, ২) বেসামরিক কার্যক্রমবিষয়ক উপদেষ্টা, এবং ৩) মেজর।

(ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট) সৈয়দ নজরুল ইসলাম

* সর্বব্যাপী সংকটের মুখে বাংলাদেশের সব মতাদর্শী জনগণের মধ্যে শক্তিশালী ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন, ভারতের যেমনটা ছিল।

জনাব নুরুল হক

* বিভিন্ন এজেন্সি ও মিশনের এবং টাকা যেখানে অসত্য বলে সেখানকার সব সংগৃহীত টাকার হিসাব রাখা উচিত।

অন্যান্য

* পাট, চা ইত্যাদি কৃষিজাত পণ্যের ভবিষ্যৎ কী?

শেখ আবদুল আজিজ

১. আসন্ন যুদ্ধ মাথায় রেখে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো শুধু মন্ত্রিপরিষদের হাতে না ছেড়ে এসব বিষয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত:

ক) অভ্যর্থনা শিবিরের ১০২ তরুণের ভবিষ্যৎ কী হবে।

খ) আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের কর্মীদের কী কী নির্দেশনা দেবেন।

গ) যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব কেবল মন্ত্রিপরিষদের নেওয়া উচিত হবে না, কারণ স্বাধীনতার সংগ্রাম কত দিন চলবে তা কারও জানা নেই।

ঘ) সাধারণ মানুষ বা এফএফদের কোনো সময়সীমার কথা ঘোষণা করা ঠিক হবে না—দীর্ঘায়িত যুদ্ধ হতাশার ছায়াপাত ঘটাবে।

ঙ)  আওয়ামী লীগ আর মুক্তিযোদ্ধাদের ভেতর চারটি ঘাঁটি তৈরি করা দরকার।

কে এম ওবায়দুর রহমান

১. অভিযানে প্রাণহানি নিয়ে সেক্টর কমান্ডার–২–এর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ওঠেনি।

২. মেজর শওকত আলী পদত্যাগ করেছেন—(ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে)।

৩. মেজর জলিল সেক্টর কমান্ডার–৯—বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা  আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৪. সেক্টর–৮–এর কমান্ডার—জানা ছিল না, কিন্তু জার্মানি থেকে আনা হয়েছে? এবং মেজর ওসমানের পরিবর্তে সেক্টর–৯–এর কিছু অংশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী

১. ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরও, অগ্রিম আমন্ত্রণ জানানো সত্ত্বেও সেক্টর কমান্ডার–২ আসেননি। তাঁর উসকানিতে ভাষণ দেওয়ার সময় জওয়ানেরা এ প্রশ্ন করেছে যে আওয়ামী লীগ তাদের জন্য কী করেছে।

২. তাঁর বাহিনী ইয়াহিয়ার বাহিনীর মতো ধর্ষণসহ সব ধরনের অপকর্মে যুক্ত। চাঁদপুর মহকুমায় তারা ডাকাতি, লুট ও ধর্ষণ করেছে।

৩. এমবির২৭ আচরণবিধি সম্পর্কিত আইন জারি করা উচিত।

৪. সিএএর ক্ষমতা ও কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা থাকা আবশ্যক।

৫. ‘ছেলেদের’ সঙ্গে …(অস্পস্ট)–এর আচরণ বৈষম্যমূলক।

৬. ক্যাপ্টেন হায়দারের প্রশিক্ষণার্থীরা—তাদের অর্ধাংশই আওয়ামী লীগের নামে স্লোগান দেয়নি।

৭. নিষ্ঠুরভাবে শুল্ক আদায় করা হয়েছে—অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। লুট করা জিনিসপত্র ভাগজোগ করা হয়েছে এবং পুরো বিষয়টাই ধামাচাপা দিয়েছে।

৮. প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রদত্ত অস্ত্রশস্ত্রের হিসাব সেক্টর কমান্ডার ছাড়াও রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে থাকতে হবে।

৯. রাজনৈতিক নেতৃত্বের হাত দিয়ে ভাতা পরিশোধ করতে হবে।

১০.  আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়া কাউকে হত্যা করা উচিত হবে না।

১১. এসএল প্রশিক্ষণার্থী,—আমাদের ছেলেদের দায়িত্ব  আওয়ামী লীগকে নিতে হবে।

১২. প্রতিটা সেক্টরে হাসপাতালের ব্যবস্থা।

১৩. রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা।

১৪. ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যদের ভাতা দিতে হবে।

১৫. ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য বিবেচনা করা উচিত। যতটুকু ভূমি আমরা দখল করতে পেরেছি, তা হাতছাড়া হতে দেব না।

১৬. অস্থায়ী সংবিধান দেওয়া উচিত।

জনাব এম এ হান্নান২৮

১. সিএএ তাদের ক্ষমতা ও কার্যক্রম সম্পর্কে লিখিত নির্দেশ পেয়েছে এবং তা মানা উচিত।

২. নিয়মিত যোদ্ধাদের দলীয় আদর্শে দীক্ষিত করার দরকার নেই—অনিয়মিতদের উদ্দীপনা জোগাতে হবে।

৩. নৌ–কমান্ডারদের দ্বিতীয় দলটিকে বিএলএফ সাহায্য করেনি, বরং নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

৪. আওয়ামী লীগের নেতাদের সম্পর্কে বিএলএফ কুৎসা রটাচ্ছে।

৫. সাব্রুম এলাকায় ওষুধের সংকট—অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন।

৬. ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ১৫০ টাকা করে পাবে—এটা কমিয়ে ৫০ টাকা করা যাবে না।

৭. গেরিলাযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের গেরিলাযুদ্ধে প্রশিক্ষিত করতে হবে।

৮.  আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির মাসে একবার আঞ্চলিক সদর দপ্তরে বৈঠকে বসা উচিত